সুনামগঞ্জ , শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
প্রফেসর সৈয়দ মহিবুল ইসলামকে সংবর্ধনা দিল জলকন্যা সাহিত্য পরিষদ সর্ববৃহৎ সমাবেশের মাধ্যমে সুনামগঞ্জে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে চায় দলটি ধর্মপাশায় বাকপ্রতিবন্ধীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের বিক্ষোভ সুবিপ্রবি’র ক্যাম্পাস প্রস্তাবিত জায়গায় নির্মাণের দাবি পথশিশু ও ছিন্নমূল মানুষদের নিয়ে পিঠা উৎসব বন্যার ঝুঁকি মোকাবেলায় ম্যারাথন প্রতিযোগিতা দিরাইয়ে ২ ফেব্রুয়ারি ‘হাওর উৎসব’ জামালগঞ্জে আলাউদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত ফসলরক্ষার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কালো মাটি! বাঁধের স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা গণিনগর ষোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ ধর্মপাশায় জলমহাল সেচে মাছ শিকারের আয়োজন,বোরো চাষ ব্যাহতের শঙ্কা যুবলীগ নেতা জসিম উদ্দিন গ্রেফতার জামালগঞ্জে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত দোয়ারাবাজারে জামায়াতের প্রচারণা মিছিল আস্থা যুব উৎসব ২০২৫ অনুষ্ঠিত ১৫ হাওরে নির্মাণ হচ্ছে স্থায়ী ফসলরক্ষা বাঁধ জেলা কৃষিঋণ মেলা ও প্রকাশ্যে কৃষিঋণ বিতরণ অনুষ্ঠিত গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে জনউদ্যোগের সচেতনতামূলক সভা

ছাতকে সুরমা নদীর ভাঙন, বিলীন হচ্ছে বাড়ি, জমি

  • আপলোড সময় : ০১-০২-২০২৫ ১০:৫০:২১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০২-২০২৫ ১০:৫০:২১ পূর্বাহ্ন
ছাতকে সুরমা নদীর ভাঙন, বিলীন হচ্ছে বাড়ি, জমি
মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী :: ছাতকে বছরের পর বছর ধরে ভাঙনের তা-ব চালাচ্ছে সুরমা নদী। সবচেয়ে ভয়াবহ তা-বলীলা চলছে ছাতক সদর ইউনিয়নের মল্লিকপুর, আন্ধারীগাও, কেশবপুর ও বাউসা এলাকায়। বহুকাল ধরে চলে আসা নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে এই এলাকার ঘরবাড়ি, স্কুল, মসজিদ, বাজার, সড়ক ও কয়েক শত একর ফসলি জমি। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এখানকার বহু পরিবারকে ৩/৪ বার করে ঘরবাড়ি ভিন্ন স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। এদিকে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কেশবপুর গ্রামের মানুষ। সরকারি ভূমি মানচিত্রে কেশব মৌজার নাম লিখা থাকলেও, টানা কয়েক যুগ ধরে বহমান নদী ভাঙনে বাস্তবে অস্তিত্ব নেই কেশবপুর মৌজার। পুরো মৌজার জমি ও মানুষের ঘরবাড়ি গিলে খেয়েছে সুরমা। একইভাবে সুরমা নদীর ভাঙনে আন্ধারীগাও, কড়িরগাও, বাউসা গ্রামের অধিকাংশ পরিবার হয়েছে গৃহহারা। সুরমা নদীর ভাঙ্গনের ফলে ছাতক-সুনামগঞ্জ ভায়া দোহালিয়াবাজার সড়কটির একাধিকবার দিক পরিবর্তন করতে হয়েছে। এরপরও শেষ রক্ষা হয়নি অতিগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির। মল্লিকপুর, আন্ধারীগাও, কড়িরগাও, কেশবপুর ও বাউসা এলাকায় অব্যাহত নদী ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে ছাতক-সুনামগঞ্জ ভায়া দোহালিয়াবাজার সড়ক। এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন ৪ থেকে ৫টি উপজেলার মানুষ। আদিকাল থেকে ছাতক পাথর, বালু ও চুনাপাথর ব্যবসার জন্য প্রসিদ্ধ। যেখানে কর্মসংস্থান চালিয়ে নেন কয়েক সহ¯্রাধিক মানুষ। আর এই ব্যবসার ডা¤িপং সাইটের জন্য খুবই উপযোগী হলো ছাতক সদর ইউনিয়নের মল্লিকপুর থেকে বাউসা এলাকা। কিন্তু সুরমা নদীর তীব্র ভাঙ্গনে অনেক ব্যবসায়ীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে। কেউ কেউ ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। এজন্য অনেকে আবার ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে দিশেহারা। সবকিছু মিলিয়ে শত শত মানুষকে বেকারত্বের খাতায় নাম লিখিয়ে নিতে হয়েছে। ভাঙ্গন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া না হলে আবারো এ সড়কটি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কার রয়েছে। কেশবপুর গ্রামের অনেক পরিবারের বসতঘর ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত বাউসা বড় মসজিদের দেয়াল ও ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা জানান, মসজিদটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এক বছর আগেই এখানে নামাজ পড়া বন্ধ করে গ্রামের অন্যত্র আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন গ্রামবাসী। নদীর তীব্র ভাঙ্গনে নদী তীরে স্থাপিত শতাধিক পাথর ভাঙ্গার মেশিন ঝুঁকিতে থাকায় অনেক ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নদী ভাঙ্গন স্থানে একাধিকবার জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন। তারপরও থামানো যাচ্ছে না নদী ভাঙ্গন। বর্ষাকালে নদী ভর্তি পানি থাকায় ভাঙ্গন কম হয়। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে নদীর পানি কমে যাওয়ায় ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করে। বর্তমানে বাউসা গ্রামের অংশে ছাতক-সুনামগঞ্জ ভায়া দোহালিয়াবাজার সড়ক, বাউশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ছাতক সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার নূরুল হক জানান, প্রায় অর্ধশত বছর ধরে দেখে আসছি সুরমা নদীর তীব্র ভাঙ্গন। প্রতি বছর চোখের সামনেই ভেঙ্গেছে মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলী জমি, স্কুল, মসজিদ ও সড়ক। তিনি নিজেও সুরমা নদীর ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি হারিয়েছেন বলে জানান। স্থানীয় পাথর, বালু ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান শাওন জানান, ক’বছর আগে তিনি একটি কারখানা স্থাপনের জন্য জমি কিনেছিলেন। এরপর থেকে ভাঙ্গনে তাঁর প্রায় ২বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জনস্বার্থে সরকারিভাবে নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান আতিকুর রহমান শাওন। ছাতক পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি শামছু মিয়া জানান, সুরমা নদীর ভাঙ্গন কবলে পড়ে ব্যবসায়ীরাসহ স্থানীয় লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীগণ ব্যবসার জন্য নেয়া ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। ছাতকে সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার আলী হোসেন জানান, নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভাঙ্গন রোধে পাউবো কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বাউসা এলাকায় নদী ভাঙ্গন রোধে উদ্যোগ নিতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
প্রফেসর সৈয়দ মহিবুল ইসলামকে সংবর্ধনা দিল জলকন্যা সাহিত্য পরিষদ

প্রফেসর সৈয়দ মহিবুল ইসলামকে সংবর্ধনা দিল জলকন্যা সাহিত্য পরিষদ